ঢাকা, রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে আত্মকর্মসংস্থানে স্বাবলম্বী হচ্ছেন হাওড়বাসী

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৫২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আত্মকর্মসংস্থানে বদলে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জের হাওড়ের জনপদ। এক সময়ের অবহেলিত হাওড়ে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এতে হাওড়বাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি গতি আসছে অর্থনীতিতেও।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওড় জেলা কিশোরগঞ্জ। কৃষি প্রধান এ জেলায় মূলত কৃষি, মাছ ধরা ও পশু-পাখি পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন হাওড়বাসী। আর হাওড়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশেষ করে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে যুক্ত করে হাওড়ের মাঝখান দিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার অল-ওয়েদার সড়ক নির্মাণে বদলে গেছে হাওরের সামগ্রিক অর্থনীতি।

হাওড়ের অসংখ্য নদী-নালা, খাল-বিল ও মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন কয়েক লাখ মানুষ। একই সঙ্গে হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন প্রায় ১০ লাখ দরিদ্র মানুষ। এক সময়ের অনাবাদি জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে সবজি, ভূট্টা ও সরিষা।

ইটনা উপজেলার সিলনি গ্রামের কৃষক মোজাফফর আলী বলেন, এক সময় বাড়ির পাশের অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকতো। বছরে একমাত্র বোরো ধানের ওপর নির্ভর করতে হতো। তবে এখন এসব জমিতে সবজি চাষ করে নিজের চাহিদা পূরনের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে কিছু বাড়তি টাকা পাওয়া যাচ্ছে।

হাসের খামার গড়ে তোলার পর ভাগ্য বদলেছে জানিয়ে নিকলী উপজেলার সিংপুর গ্রামের দরিদ্র দিন মজুর আলী হোসেন বলেন, মুক্ত জলাশয়ে হাঁস পালন করে ভাগ্য বদলেছে তার মতো কয়েক হাজার মানুষের। আগে কৃষি জমিতে শ্রমিকের কাজ করে ৮ সদস্যের পরিবারের ভরণ-পোষণ চালাতে হিমশিম খেতে হতো। তবে ৩ বছর আগে ৫০টি হাঁস নিয়ে খামার গড়ে তোলেন তিনি। বর্তমানে খামারে আড়াই হাজার হাঁস রয়েছে বলে জানান তিনি।

আর তাড়াইল উপজেলার করাতি গ্রামের রতন জানান, বেকারত্ব দূর করতে ছাগল পালন শুরু করেন। এছাড়া গত কয়েক বছরে ছাগল পালন করে ৭ লাখ টাকা আয় করেছেন বলেও জানান তিনি।

শ্রম, মেধা আর মননে নিজেদের ভাগ্যবদলের চেষ্টায় কাজ করছেন হাওড়বাসী। এ ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যমী সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।

তবে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে হাওড়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আরও বেশি ভূমিকা পালন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আবদুস সাত্তার বলেন, প্রয়োজনের তাগিদে হাওড়ের মানুষ উৎপাদন ও অগ্রগতিতে নানা পন্থা বেছে নিচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে হাওড়ে ব্যাপক হারে সবজির আবাদ হচ্ছে। পতিত জমিতে ভূট্টার আবাদ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক।

এছাড়া ছাগল ও হাঁস পালনে হাওড়বাসীর জীবনমান উন্নয়ন হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, উদ্যোক্তরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এতে করে নিজেরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় বিনামূল্যে সার ও বীজসহ নানা কৃষি উপকরণ দেয়া হচ্ছে বলে জানান আবদুস সাত্তার।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়